ইতিমধ্যে ভারতবর্ষে বেশ কিছু প্রকল্প চালু রয়েছে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল আরও একটি নতুন প্রকল্প। প্রকল্পটির নাম ‘প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা’। ১৭ ই সেপ্টেম্বর ছিল ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। আর এই বছর সেদিনই পড়েছিল বিশ্বকর্মা পুজো। দেশের জনগণকে উপহার দিতে এদিনই নতুন প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন তিনি। অবশ্য এই ব্যাপারে ১৫ ই আগস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। সেই প্রকল্পেরই শুভ সূচনা ঘটে বিশ্বকর্মা পুজোতে। তবে এটি কেবলমাত্র দেশের শিল্পী ও কারিগরদের জন্য।
এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে যাবেন জেলে, ধোপা, কুমোর, কামার, ছুতোর, দর্জি, মালা প্রস্তুতকারক, স্বর্ণকার, মৃৎশিল্পী, রাজমিস্ত্রি, চর্মকার, কাঠের মিস্ত্রি, ভাস্কর সহ দেশের সকল শ্রমজীবী মানুষেরা। এবার এই প্রকল্পে আবেদন শুরু হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের দৌলতে শ্রমজীবী মানুষেরা প্রাথমিকভাবে পেয়ে যাবেন ১৫ হাজার টাকা। অবশ্যই এই টাকা তাঁদের ব্যবহার করতে হবে আধুনিক সরঞ্জাম কিনতে। তাছাড়া ঐতিহ্যগত কারিগর ও শিল্পীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবার তাঁদের দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। এই বিশেষ প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কেন্দ্রের তরফ থেকে তাঁদের দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে ভাতা হিসেবে তাঁরা ৫০০ টাকা করে পেয়ে যাবেন। মূলত ওবিসি সম্প্রদায়ের পারিবারিক গত শিল্পী ও কারিগররাই ৫ দিন ব্যাপী আয়োজিত হওয়া এই প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁরা ঋণ নিতে পারবেন। প্রথম দফায় তাঁরা পেয়ে যাবেন ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ । এক্ষেত্রে তাঁদের সুদের পরিমাণ থাকবে ৫ শতাংশ। আর দ্বিতীয়ত দফায় তাঁরা নিতে পারবেন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ। এক্ষেত্রে তাঁদের সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে। এভাবে মোট ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন তাঁরা। তবে ঋণ পরিশোধের নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। প্রথম দফায় যে ঋণ তাঁরা নেবেন সেক্ষেত্রে ১৮ মাসের মধ্যে তাঁদের তা পরিশোধ করতে হবে। আর দ্বিতীয় দফার ঋণ পরিশোধ করতে তাঁরা সময় পাবেন ৩০ মাস। এই ঋণ যদি ডিজিটাল মাধ্যমে শোধ করা হয় সেক্ষেত্রে প্রতি লেনদেন পিছু ১ টাকা ক’রে ইন্সেন্টিভ পেয়ে যাবেন কারিগররা।
যে সমস্ত শিল্পী ও কারিগররা ঐতিহ্যগত ভাবে এই কাজ করে আসছেন অর্থাৎ বংশ পরম্পরায় যাঁদের এই কাজ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার সুবিধা কেবলমাত্র তাঁরাই পাবেন। এই যোজনা আগামী ৪ বছর যাতে নির্দ্বিধায় চলতে পারে সেই কারণে কেন্দ্র সরকার প্রাথমিকভাবে এই খাতে ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই ব্যাপারে ২০২৩ সালের বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দিয়েছিলেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের শিল্পী ও কারিগররা যাতে নিজেদের উৎপাদিত দ্রব্য দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বিক্রি করতে পারেন, সেই দিকে সাহায্য করবে কেন্দ্র সরকার। তাছাড়া প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশগ্রহণ করলে তাঁদেরকে বিশ্বকর্মা পরিচয় পত্র ও মানপত্র দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনায় আবেদন করার পদ্ধতি :-
বাড়ির কাছাকাছি যে কোন কমন সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে বায়োমেট্রিক পরিচয় যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনায় নাম নথিভুক্ত করা যাবে। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে। আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন।